রাশিয়া ছাড়া ইউক্রেনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব নয় বলে সাফ
জানিয়েছেন রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ। তিনি বলেছেন, সমষ্টিগত
নিরাপত্তা আলোচনা করতে হলে রাশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ ও চীন, সব পক্ষকেই
যুক্ত থাকতে হবে। একই সঙ্গে ল্যাভরভ জানান, মস্কো চাইছে আলোচনা হোক ধাপে
ধাপে। আর শীর্ষ বৈঠক তখনই হবে যখন সব প্রস্তুতি শেষ হবে।
এদিকে ইউক্রেন যুদ্ধ শেষে দেশটির নিরাপত্তা কিভাবে হতে পারে তা নিয়ে
আলোচনা করেছেন ন্যাটোর সামরিক প্রধানেরা। চলমান কূটনৈতিক আলোচনার মধ্যেও
ইউক্রেনের বিভিন্ন অঞ্চলে হামলা চালিয়েছে রাশিয়া।
ইউক্রেনের সুমি অঞ্চলে রাতভর ড্রোন হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। এতে বেশ
কয়েকজন আহত হয়েছেন। স্থানীয় প্রসিকিউটর কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, হামলায়
কয়েকটি বাড়িতে আগুন ধরে যায়। ধ্বংস হয় কয়েকটি স্থাপনা। একই রাতে রাশিয়া
ওডেসার একটি গ্যাস বিতরণ স্টেশনেও আঘাত হানে।
হামলা পাল্টা হামলায় ক্ষয়ক্ষতির প্রকৃত চিত্র নিয়ে চলছে তীব্র
তথ্যযুদ্ধ। রুশ হ্যাকার গোষ্ঠীগুলো দাবি করেছে, ইউক্রেন এরইমধ্যে ১৭ লাখের
বেশি সেনা হারিয়েছে।
ইউক্রেনীয় সেনাদের ব্যক্তিগত তথ্য, মৃত্যুর স্থান, ছবি ও আত্মীয়দের
নাম-ঠিকানাও সংগ্রহের দাবি করেছে হ্যাকার গ্রুপগুলো। তবে জেলেনস্কি
প্রশাসনের দাবি, ২০২২ থেকে এ পর্যন্ত নিহত সেনার সংখ্যা ৪৬ হাজার। আহত
প্রায় ৩ লাখ ৮০ হাজার।
রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ স্পষ্ট জানিয়েছেন
ইউক্রেনের নিরাপত্তা মস্কো ছাড়া সম্ভব নয়। তিনি বলেন, রাশিয়াকে বাদ দিয়ে
নিরাপত্তা গ্যারান্টি বা নতুন কাঠামো তৈরি করার প্রচেষ্টা কোন সমাধান আনবে
না।
তার মতে, সমষ্টিগত নিরাপত্তা আলোচনা করতে হলে রাশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র,
ইউরোপ ও চীন, সব পক্ষকেই যুক্ত থাকতে হবে। একইসাথে তিনি ইঙ্গিত দিয়েছেন,
রাজনৈতিক সমাধানে ভূমি বিনিময় বা আঞ্চলিক সমঝোতা গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে।
মস্কো চাইছে আলোচনা হোক ধাপে ধাপে, কিন্তু শীর্ষ বৈঠক হবে কেবলমাত্র যখন সব
প্রস্তুতি শেষ হবে।
এদিকে ইউক্রেনের নিরাপত্তা নিশ্চয়তার বিষয়ে বুধবার ভিডিও কনফারেন্সে
আলোচনা করেছেন ন্যাটো সামরিক প্রধানরা। এতে যুক্ত ছিলেন মার্কিন জেনারেল
অ্যালেক্সাস গ্রিনকেভিচ ও জয়েন্ট চিফস অব স্টাফের চেয়ারম্যান জেনারেল ড্যান
কেইন। তারা আলাস্কায় ট্রাম্প-পুতিন বৈঠক এবং হোয়াইট হাউসে
ট্রাম্প-জেলেনস্কি ও ইউরোপীয় নেতাদের বৈঠকের অগ্রগতি নিয়ে কথা বলেন।
ইউরোপীয় দেশগুলো চাইছে, যুদ্ধ শেষে ইউক্রেনের জন্য একটি বিশেষ ফোর্স’
গঠন করা হোক, যেখানে ন্যাটোর সেনারা প্রতিরক্ষার নিশ্চয়তা দেবে। ফ্রান্স ও
যুক্তরাজ্যের নেতৃত্বে এ নিয়ে সক্রিয় প্রস্তুতি চলছে। তবে রাশিয়া এরইমধ্যে
স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে কোনো পশ্চিমা সেনা ইউক্রেনে প্রবেশ করলে তা মস্কো
মেনে নেবে না।