×


  • নিউজ ডেস্ক

    প্রকাশ :- ২০২৫-১২-২৫, | ১১:০৩:২৩ |
প্রায় ১৮ বছর ধরে লন্ডনে অবস্থানের পর দেশে ফিরেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। শারীরিকভাবে দেশের বাইরে থাকলেও বাংলাদেশের রাজনীতিতে তার প্রভাব ও উপস্থিতি কখনোই পুরোপুরি অনুপস্থিত ছিল না। বরং সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তিনি একটি ভিন্নধর্মী রাজনৈতিক পরিচালন পদ্ধতি গড়ে তুলেছেন- যেখানে প্রযুক্তি, সাংগঠনিক নেটওয়ার্ক ও আদর্শিক নিয়ন্ত্রণ—সবকিছুই মিলেমিশে কাজ করেছে। সরাসরি উপস্থিত না থেকেও কীভাবে একটি বড় রাজনৈতিক দলকে নিয়ন্ত্রণ ও দিকনির্দেশনা দেয়া যায়—তারেক রহমানের রাজনৈতিক ভূমিকা তারই একটি ব্যতিক্রমী উদাহরণ হয়ে উঠেছে।

ভার্চুয়াল নেতৃত্বের বাস্তব প্রভাব
লন্ডনে অবস্থান করলেও তারেক রহমান নিয়মিতভাবে দলের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠক করেছেন। ভিডিও কনফারেন্স, এনক্রিপটেড কল ও অনলাইন মিটিংয়ের মাধ্যমে তিনি কেন্দ্রীয় কমিটি থেকে শুরু করে তৃণমূল পর্যায়ের সাংগঠনিক বিষয়গুলো সম্পর্কে অবহিত ছিলেন। গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত, আন্দোলনের কর্মসূচি কিংবা কৌশল নির্ধারণে এসব বৈঠকের ভূমিকা উল্লেখযোগ্য।

সাংগঠনিক নেটওয়ার্ক ও বিশ্বস্ত নেতৃত্ব
বিএনপির ভেতরে তার ঘনিষ্ঠ ও বিশ্বস্ত একটি গোষ্ঠী রয়েছে, যারা মাঠপর্যায়ে তার নির্দেশনা বাস্তবায়ন করেন। দলীয় মহাসচিবসহ সিনিয়র নেতাদের মাধ্যমে সিদ্ধান্তগুলো সাংগঠনিকভাবে নিচের দিকে প্রবাহিত হয়। এতে করে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে তার অবস্থান অটুট এবং দল পরিচালনায় ধারাবাহিকতা বজায় ছিল।

বার্তা ও বিবৃতির রাজনীতি
তারেক রহমানের রাজনৈতিক বক্তব্য প্রচারে তৎকালীন সরকার নিষেধজ্ঞা দিলেও নেতাকর্মীদের কাছে তার বার্তা পৌঁছানো ঠেকানো যায়নি। জাতীয় দিবস, গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক ঘটনা কিংবা আন্দোলনের সময় তার বক্তব্য বিএনপির কর্মী-সমর্থকদের জন্য দিকনির্দেশনার কাজ করেছে। অনেক ক্ষেত্রে এসব বিবৃতিই দলের রাজনৈতিক অবস্থান স্পষ্ট করেছে এবং সরকারের বিরুদ্ধে সমালোচনার ভাষা নির্ধারণ করেছে।

প্রবাসী রাজনীতি ও আন্তর্জাতিক যোগাযোগ
লন্ডনে অবস্থানের কারণে আন্তর্জাতিক মহল ও প্রবাসী বাংলাদেশিদের সঙ্গে তার যোগাযোগ তুলনামূলকভাবে সহজ ছিল। প্রবাসী বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনগুলো তার নেতৃত্বে সক্রিয় ছিল সবসময়ই। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা, কূটনৈতিক মহল ও বিদেশি রাজনীতিকদের সঙ্গে যোগাযোগের মাধ্যমে তিনি বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন।

আদর্শিক উত্তরাধিকার ও রাজনৈতিক প্রতীক
জিয়াউর রহমান ও খালেদা জিয়ার উত্তরাধিকার হিসেবে তারেক রহমান বিএনপির কাছে একটি গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক প্রতীক। দলীয় সমর্থকদের বড় অংশ তাকে ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব হিসেবে দেখে সবসময়ই। এই আদর্শিক ও আবেগী সংযোগ তার অনুপস্থিতিতেও দলকে ঐক্যবদ্ধ রাখতে সহায়ক ছিল।

সীমাবদ্ধতা ও সমালোচনা
তবে বিদেশে অবস্থানের কারণে সরাসরি মাঠের রাজনীতিতে যুক্ত না থাকতে পারা তার নেতৃত্বের একটি বড় সীমাবদ্ধতা হিসেবে দেখেছেন সমালোচকরা। আন্দোলনের সময় মাঠপর্যায়ের বাস্তব পরিস্থিতি বোঝা বা তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত নেয়ায় জটিলতা তৈরি হয়েছে। তবুও সমর্থকদের দাবি, বর্তমান প্রযুক্তিনির্ভর সময়ে দূরত্ব আর বড় বাধা ছিল না।

নিউজটি শেয়ার করুন



এ জাতীয় আরো খবর..
ইউটিউবে আমরা...
ফেসবুকে আমরা...