বিপদ-আপদ থেকে মুক্তি, দুশ্চিন্তা কিংবা কোনোকিছু চেয়ে বরাবরই মুমিনরা সৃষ্টিকর্তার দরবারে দু’হাত তুলে ধরেন। মহান আল্লাহ তা’আলাও খোদ ঘোষণা দিয়েছেন, তিনি পরম করুণাময় ও অসীম দয়ালু। যখন কোনো বান্দা তার নিকট দুই হাত তুলে প্রার্থনা করে, তখন আল্লাহ রাব্বুল আলামীন তাকে শূন্যহাতে ফিরিয়ে দেন না। (সূরা বাকারা, আয়াত: ১৮৬)
খোদ রাসুলুল্লাহ (সা.)-ও আল্লাহর কাছে পানাহ চেয়ে দোয়া করতেন। উম্মতদেরও তিনি মহান রবের নিকট দোয়া করার পদ্ধতি জানিয়েছেন। যা বিভিন্ন সময়ে সাহাবায়ে-কেরামদের মাধ্যমে বর্ণিত নানা হাদিসে এসেছে। এ ক্ষেত্রে মহান সৃষ্টিকর্তার কাছে হেদায়েত চেয়েও দোয়া করা শিখিয়েছেন নবীজি (সা.)।
পবিত্র কুরআনেও মহান রব ইরশাদ করেছেন, ‘আর যারা আমার পথে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালায় তাদের আমি অবশ্য অবশ্যই আমার পথে পরিচালিত করবো। অবশ্যই আল্লাহ সৎকর্মপরায়ণদের সঙ্গে আছেন।’ ( সূরা আনকাবুত, আয়াত: ৬৩)
এ ক্ষেত্রে মহান রবের কাছে হেদায়াত চেয়ে দোয়ার কথাও হাদিসে এসেছে। ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত একটি হাদিসে এসেছে, নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিম্নোক্ত দোয়া পড়তেন-
رَبِّ أَعِنِّي وَلاَ تُعِنْ عَلَىَّ وَانْصُرْنِي وَلاَ تَنْصُرْ عَلَىَّ وَامْكُرْ لِي وَلاَ تَمْكُرْ عَلَىَّ وَاهْدِنِي وَيَسِّرِ الْهُدَى لِي وَانْصُرْنِي عَلَى مَنْ بَغَى عَلَىَّ رَبِّ اجْعَلْنِي لَكَ شَكَّارًا لَكَ ذَكَّارًا لَكَ رَهَّابًا لَكَ مِطْوَاعًا لَكَ مُخْبِتًا إِلَيْكَ أَوَّاهًا مُنِيبًا رَبِّ تَقَبَّلْ تَوْبَتِي وَاغْسِلْ حَوْبَتِي وَأَجِبْ دَعْوَتِي وَثَبِّتْ حُجَّتِي وَسَدِّدْ لِسَانِي وَاهْدِ قَلْبِي وَاسْلُلْ سَخِيمَةَ صَدْرِي
উচ্চারণ: রাব্বি আন্নিয়্যি ওয়া-লা তুয়্যিন আলাইয়্যা ওয়া-আনসুরনি ওয়া-লা-তানসুরু আলাইয়্যা ওয়াম-কুরলি ওয়া-লা-তামকুরু আলাইয়্য, ওয়াহদিনি ওয়া-ইয়াস্সিরিল-হুদা লিয়া-ওয়াআনসুরনি আলাইয়্য মান বাগায়্যা আলাইয়্যা রাব্বি-জা’আলনি লাকা-সাক্কারান, লাকা-ঝ্বাক্কারান, লাকা রাহ্হাবান, লাকা মিজওয়াআন, লাকা মুখবাত্বন-ইলাইকা-আওওয়াহান, মুনিইবান, রাব্বি তাকাব্বাল ত্বাওবাতি ওয়া-আগসিল হাওবাতি, ওয়া-জ্বিব-দ্বা’ওয়াতি ওয়া-তাব্বাত হুজ্জাতি ওয়া-লিসানি ওয়াহ্দি ক্বলবি ওয়াস-লুল সাখ্যিমাতি-স্বদরিয়্যি।
অর্থ: হে আমার রব্ব! তুমিই আমায় সহযোগিতা করো। আমার বিরুদ্ধে সহযোগিতা করো না, আমায় সাহায্য করো। আমার বিরুদ্ধে সাহায্য করো না। আমার পক্ষে কৌশল অবলম্বন করো, আমার বিরুদ্ধে কৌশল অবলম্বন করো না। আমাকে হেদায়াত করো, আমার জন্য হেদায়াত সহজ করে দাও। যারা আমার ওপর জুলুম করে তাদের বিরুদ্ধে আমাকে সাহায্য কর। হে পারওয়ারদিগার! আমাকে বানাও তোমার প্রতি শুকুরগুযার (শুকরিয়া আদায়কারী), তোমার যিকরকারি, তোমার প্রতি ভয় পোষণকারী, তোমার প্রতি আনুগত্যশীল, তোমার প্রতি বিনয়াবনত, তোমার প্রতি মিনতিপূর্ণ ও প্রত্যাবর্তনশীল। হে আমার রব্ব! আমার তওবা কবুল করো, ধুয়ে দাও আমার সব গুনাহ, জবাব দাও আমার দোয়ার, প্রতিষ্ঠিত করো আমার দলিলাদি, সঠিক রাখো আমার জবান, হেদায়াত করো আমার অন্তরকে। আর বের করে দাও আমার অন্তর থেকে সব হিংসা ও বিদ্বেষ। (সুনান আত তিরমিজি, হাদিস: ৩৫৫১)
এ জাতীয় আরো খবর..